বুধবার, ১০ জুলাই, ২০১৩

আর্সেনিক মরন ঘাতী রোগ, এর হাত থেকে বাঁচার উপায় ও করনীয় ।


আক্রান্ত এলাকা


বিভাগ
আর্সেনিক আক্রান্ত রোগী
চট্টগ্রাম বিভাগ
১৯,১৬৫ জন
খুলনা বিভাগ
,৩১৫ জন
ঢাকা বিভাগ
,৫৫২ জন
রাজশাহী বিভাগ
(এবং বর্তমান রংপুর বিভাগ)
,২৬৭ জন
বরিশাল বিভাগ
৭৮৮ জন
সিলেট বিভাগ
২৩৩ জন
আর্সেনিক আক্রান্ত সর্বমোট রোগী ৩৮,৩২০ জন (২০০৮-০৯ জরিপ)সূত্র: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর[১২]
২০১০ খ্রিষ্টাব্দের ২২ মার্চে বাংলাদেশ সরকার ও ইউনিসেফ প্রকাশিত প্রতিবেদনে বাংলাদেশের ৫৪টি জেলার নলকূপের পানি-পরীক্ষার তথ্য পরিবেশিত হয়এ থেকে জানা যায়, ৪৭টি জেলার ২৩৩টি উপজেলার ২,০০০ ইউনিয়নের ৩১,৪৯৭টি গ্রাম আর্সেনিক দূষণের শিকারবাংলাদেশের মান অনুযায়ী যেসব এলাকায় ৫% নলকূপের পানিতে আর্সেনিক পাওয়া যায়, সেসব এলাকাকে আর্সেনিক দূষণের শিকার এলাকা বলে চিহ্নিত করা হয়[৭]
এশিয়া আর্সেনিক নেটওয়ার্ক, যশোরের দেয় তথ্যমতে, যশোর জেলায় আর্সেনিকে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৩,০০০ জনজেলার শার্শা (৫৫০ জন), চৌগাছা (৯৫০ জন) ও ঝিকরগাছায় এই প্রকোপ সবচেয়ে বেশিএমনকি উপজেলাগুলোর কয়েকটি গ্রামে প্রায় ৬০% মানুষই আক্রান্ত[১৩]

সম্ভাব্য কারণসমূহ

বাংলাদেশে আর্সেনিক প্রকোপ যখন প্রথম ১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দে আবিষ্কৃত হয়েছিলো, তখন অনেকেই ধারণা করেছিলেন সার, কীটনাশক ইত্যাদির ব্যবহার, কারখানার বর্জ্য নিষ্কাশন, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের খুঁটি (আর্সেনিক যৌগ দ্বারা পরিশোধিত) ইত্যাদিই এই সমস্যার মূল কারণএরপর গবেষকগণ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জরিপ ও গবেষণাকার্য পরিচালনা করেনসেসব সমীক্ষা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, এতো বিস্তৃত এলাকার দূষণ এসমস্ত উৎস থেকে হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে সর্বসম্মতভাবে গৃহীত 'ঢাকা ঘোষণা'য় জানানো হয় যে, আর্সেনিক দূষণের কারণটি ভূতাত্ত্বিক[১৪]
ভূতাত্ত্বিকভাবে সৃষ্ট দূষণ সম্পর্কে প্রথম তত্ত্বটি প্রস্তাব করে ভারতের পশ্চিম বাংলার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা দলএই তত্ত্বানুযায়ী অতিমাত্রায় ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের কারণে ভূ-অভ্যন্তরে অক্সিজেন প্রবেশের ফলে পানিবাহী শিলাস্তরের আর্সেনিক পাইরাইট জারিত হয়ে ভূগর্ভস্থ পানিতে আর্সেনিক তরল অবস্থায় যুক্ত হচ্ছেপরে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক সমীক্ষায় এ তত্ত্বটির সমর্থনে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] পরবর্তিতে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের একটি যৌথ গবেষক দল একটি বিকল্প তত্ত্ব উপস্থাপন করেনতাঁদের মতে, প্রক্রিয়াটি বদ্বীপ পলল ও নদীবাহিত পলল সমভূমির পলি সঞ্চয়ন প্রক্রিয়ার সাথে সম্পর্কিতবিভিন্ন উৎস থেকে আর্সেনিকযুক্ত পলি বদ্বীপ ও পলল সমভূমি অঞ্চলে জমা হয়, যেখানে আর্সেনিকের বাহক হলো প্রধানত আয়রন অক্সিহাইড্রোক্সাইড নামের মনিক মিনারেলপরবর্তিতে পলির সঙ্গে সঞ্চিত জৈব পদার্থ কর্তৃক অক্সিজেন আহরণের ফলে পানিবাহী শিলাস্তরে বিজারিত অবস্থার সৃষ্টি হয়এসময় বিজারণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আয়রন অক্সিহাইড্রোক্সাইডের মধ্যে সংযোজিত (absorbed) আর্সেনিক ও আয়রন, ভূগর্ভস্থ পানিতে তরল অবস্থায় মুক্ত হয়অধিকতর বৈজ্ঞানিক ভিত্তির কারণে বর্তমানে এই তত্ত্বটি বেশি গ্রহণযোগ্য[১৪]

ওয়ার্ল্ড ব্যাংক হ্যাভার্ড এ্যাকশন প্লান-১৯৬৬

ওয়ার্ল্ড ব্যাংক হ্যাভার্ড এ্যাকশন প্লান-১৯৬৬ অনুসারে, ভারতের নদীগুলোতে হিন্দুশাস্ত্র অনুসরণে মানুষসহ সকল প্রাণীর শবদেহ বা ভস্ম ফেলা হয়, এতে, পানিতে যে আর্সেনিকের বিষক্রিয়ার সৃষ্টি হয়, তা ফারাক্কা ব্যারেজের ফলে নিম্নাঞ্চলের (অর্থাৎ বাংলাদেশের) ভূগর্ভস্থ সর্বনিম্ন স্তরে আটকা পড়বেকারণ নদীগুলোর যে বিপুল জলপ্রবাহ বাংলাদেশের উপর দিয়ে গিয়ে বঙ্গোপসাগরে মিশেছে, ফারাক্কা বাঁধের কারণে সেই প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হওয়ায় আর্সেনিক বিষ বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত যেতে পারবে নাফলে ২০০২ সাল নাগাদ নিম্নাঞ্চলের প্রতিটি নলকূপেই আর্সেনিক বিষ নির্গত হতে বাধ্য[১৪]

আর্সেনিক উদ্বাস্ত‌ু

আর্সেনিকের প্রকোপ বাড়ায় যশোর জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে বহু লোক বাঁচার তাগিদে গ্রামছাড়া হয়েছেনযশোরের কয়ারপাড়াচৌগাছার অন্তত ৫০ জন মানুষ আর্সেনিকে মারা গেছেন, আর অন্তত ২০টি পরিবার এলাকা ছেড়ে চলে গেছে (২০১০ খ্রিষ্টাব্দ)[১৩]

সমাধানের উদ্যোগ

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে দেশের আক্রান্ত এলাকায় নিরাপদ পানি সরবরাহের উদ্যোগ নেয়া হয় বিভিন্ন সময় ২০০৬-০৭ অর্থবছরে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে ১৭টি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন ছিলো[৭]

প্রতিরোধক ব্যবস্থা

আর্সেনিক বিষক্রিয়া থেকে মুক্তির জন্য আপাতত প্রতিরোধক ব্যবস্থাই সবচেয়ে উপযোগীব্যক্তিগত পর্যায়ে করণীয়গুলো হলো:[১৪]

  • আর্সেনিকযুক্ত নলকূপের পানি পান ও রান্নার কাজে ব্যবহার না করা
  • নিকটে আর্সেনিকমুক্ত নলকূপ পাওয়া না গেলে পুকুর বা নদী হতে ১ কলসি পানিতে আধা চামচ ফিটকিরি মিশিয়ে ২-৩ ঘণ্টা রেখে দিয়ে, পরে উপর থেকে তলানিবিহীন পরিষ্কার পানি পান করতে হবে
  • বৃষ্টির পানি যেহেতু আর্সেনিকমুক্ত, তাই বৃষ্টি আরম্ভ হবার ৫ মিনিট পর সরাসরি পরিষ্কার পাত্রে সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে তা পান করতে হবে

আর্সেনিকমুক্তকরণ বিবিধ পরিশোধন পদ্ধতি 

ওয়টার ট্রিটমেন্ট এক্সপার্ট হোম ফিল্টার মানসম্মত ও নিরাপদ পানি ।

 

মানব দেহের প্রতিটি অঙ্গের প্রয়োজন  বিশুদ্ধ পানি।

আপনি পরিশোধিত বিশুদ্ধ পানি পান করবেন আর গোসল, হাত-মুোয়া,অজু করা, রান্না, থালা বাসন ধোয়া সহ সকল কাজ করবেন দূষিত পানি দিয়ে, তাঁতে কি আপনি পানি বাহিত রোগ থেকে মুক্ত ?

োন অবস্থায়ই নয় ।

তাছারা দূষিত পানি সরাসরি ত্বকে এবং চুলে আক্রমণ করেত্বকে ক্যান্সার, চুল পড়া, চর্ম রোগ সৃষ্টিতে অনেকাংশে দায়

আর্সেনিকমুক্তকরণ

  • পিএসএফ-এর মাধ্যমে শোধন-সক্ষম ফিল্টারের মাধ্যমে পানি আর্সেনিকমুক্ত করে ব্যবহার করতে হবে
  • বাংলাদেশে, আর্সেনিকযুক্ত পানি থেকে আর্সেনিক মুক্ত করার একটি সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী পদ্ধতি রয়েছে, যাকে বলা হয় তিন স্তর ফিল্টারিং পদ্ধতি বা বহুমুখি ( মাল্টি সিস্টেম ) পরিশোধিত পদ্ধতি । প্রথম ্তর রাখতে হয় ০.৪-০ সিলিকা সেন্ড, ০.৬-১.৫ ্যাস সেন্ড । ২য় স্তর কোকোনাইট কা্বন ।  ৩ তৃতীয় স্তর ০.২-০৫ মাইক্রোটন/ শেডীমেণ্ড ফিল্টার। 
  • এই পদ্ধতিতে আর্সেনিকের মাত্রা অন্ততপক্ষে ০ পিপিবি (০.৫ বিলিয়নে ০%)-এর নিচে নামিয়ে আনা সম্ভবhomefilterwater.blogspot.com

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন