শনিবার, ১৩ জুলাই, ২০১৩

আর্সেনিক মরণঘাতী রোগ সম্পর্কে অজানা তথ্য পড়ুন । প্রথম অধ্যায়


বিশুদ্ধ পানি শুধু পান করলেই কি আপনার স্বাস্থ্য পানিবাহিত রোগ থেকে মুক্ত ?

পানি বিশেষজ্ঞদের এক গবেষনায় দেখা গেছে যে, যারা বিশুদ্ধ পানি পান করছেন তাঁরাও কিন্তু পানি বাহিত রোগ থেকে মুক্ত নয়। তার কারন, মানব দেহের প্রতিটি অংশে প্রয়োজন  বিশুদ্ধ পানি

আপনি পরিশোধিত বিশুদ্ধ পানি পান করবেন আর গোসল, হাত মুধোয়া,অজু করা, রান্না, থালা বাসন ধোয়া সহ সকল কাজ করবের দূষিত পানি দিয়ে, তাঁতে কি আপনি পানি বাহিত রোগ থেকে মুক্ত ? কোন অবস্থায়ই নয় । তাছারা দূষিত পানি সরাসরি ত্বকে এবং চুলে আক্রমণ করেত্বকে ক্যান্সার, চুল পড়া, চর্ম রোগ সৃষ্টিতে অনেকাংশে দায়

*/  শিশুরা কুলি করার সময় দূষিত পানি পান করে এতে শিশুদের ডায়রিয়া, জন্ডিস    রোগে আক্রান্ত হয়ার সম্ভবনা থাকে

*/  দূষিত পানি দিয়ে রান্না করলে, খাবারের স্বাদ নষ্ট হয় এবং সহজেই পচন ধরে

*/ যাবতীয় ফল, শাকসবজি বিশুদ্ধ পানি দিয়ে ধোয়া আবশ্যক   

*/ যাবতীয় থালা বাসন, ঘরের অনন্য জিনিসগুলি ও বিশুদ্ধ পানি দিয়ে ধোয়া আবশ্যক   

মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মান অনুযায়ী ১ লিটার পানিতে ১০ মাইক্রোগ্রাম আর্সেনিক থাকলে সেই পানি দূষিত বাংলাদেশের মান অনুযায়ী ১ লিটার পানিতে ৫০ মাইক্রোগ্রাম আর্সেনিক থাকলে সেই পানিকে নিরাপদ পানি বলা হয় না[৭] 

আবিষ্কার পশ্চিম বাংলার (ভারত) দিপঙ্কর চক্রবর্তী সর্বপ্রথম, ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দে, এই দুর্যোগের ব্যাপারটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরেন[৮][৯][১০] তিনি ১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দে পশ্চিম বাংলায় তাঁর গবেষণা শ‌ুর‌ু করেন, এবং পরবর্তিতে সেগ‌ুলো প্রকাশ করেন ২০০০ খ্রিস্টাব্দে তিনি বাংলাদেশে একটি গবেষণা পরিচালনা করেন, যেখানে তিনি পানি, আক্রান্ত মানুষের নোখ, চুল এবং প্রস্রাবের হাজারেরও বেশি নমুনা সংগ্রহ করেনসেই গবেষণায় বেরিয়ে আসে, ৯০০ গ্রামবাসীর শরীরে সরকারি মাত্রার চেয়ে বেশি মাত্রার আর্সেনিক রয়েছে

সমস্যার বিবরণ

বাংলাদেশে, সর্বপ্রথম ১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বড়ঘরিয়া ইউনিয়নের ভূগর্ভস্থ পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি আবিষ্কৃত হয়এরপর ২০০১ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ জিওলজিক্যাল সার্ভে বাংলাদেশের ৬১টি জেলার নলকূপের পানি পরীক্ষা করে জানায়: ৪২% নলকূপের পানিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানের চেয়ে বেশি (২৫% নলকূপের পানিতে বাংলাদেশের মানের চেয়ে বেশি) মাত্রায় আর্সেনিক রয়েছে[৭] দিনে দিনে তা ব্যাপক আকার ধারণ করে চলেছে
২০১০ খ্রিস্টাব্দে ল্যানসেট সাময়িকীতে প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রবন্ধ থেকে জানা যায়, আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করলে মৃত্যু ঝুঁকি বেড়ে যায়পানিতে কী পরিমাণ আর্সেনিক আছে এবং একজন ব্যক্তি কতদিন যাবৎ এই পানি পান করছেন, তার উপর মৃত্যুঝুঁকি নির্ভর করেআর্সেনিকের বিষক্রিয়া মৃত্যুর প্রধান কারণ না হলেও তা মৃত্যুঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়প্রতিদিনের মোট আর্সেনিক গ্রহণ ও প্রস্রাবে আর্সেনিকের পরিমাণের মধ্যে সম্পর্ক রয়েছেপানিতে আর্সেনিক বেশি থাকলে মৃত্যুঝুঁকিও বেশি আড়াইহাজারে করা এ গবেষণায় দেখা গেছে, আর্সেনিকযুক্ত পানি পানের কারণে সাধারণ রোগে গড়ে মৃত্যুঝুঁকি ২১%, এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগে মৃত্যুঝুঁকি ২৪% বেড়েছে দীর্ঘস্থায়ী রোগে মৃত্যুহার বৃদ্ধিতে আর্সেনিকের সম্পৃক্ততার ব্যাপারটি আগেও, যুক্তরাষ্ট্র, চিলি, আর্জেন্টিনা, তাইওয়ান এবং বাংলাদেশের মতলবে করা বিভিন্ন গবেষণায় পাওয়া গিয়েছিলোপ্রতি লিটার পানিতে ১৫০ মাইক্রোগ্রাম আর্সেনিক পান করার ফলে ক্রনিক ডিজিজ, য়থা ক্যান্সার, হ‌ৃদরোগ, ডায়বেটিসের মতো রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যুঝুঁকি ৬৪% বেড়েছেসাধারণ রোগে আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুঝুঁকিও বাড়ে প্রায় সমপরিমাণেগবেষকদের মত, আর্সেনিকযুক্ত পানি পান না করলে এই মৃত্যু কম হতো[১১]
গবেষকদের অভিমত, আর্সেনিক পানরত ব্যক্তির, আর্সেনিকের বিষক্রিয়ায় যকৃৎ, ত্বক, কিডনি, ফুসফুসহৃদপিন্ডের ক্যান্সার হতে পারে[১১] আর্সেনিকের কারণে ইতোমধ্যেই (২০১০) বিভিন্ন জনের হাত-পা ইত্যাদি অংশে বিভিন্ন রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে এমনকি রোগের প্রকোপ ঠেকাতে অনেকের হাত-পায়ের আঙ্গুলও কেটে ফেলতে হচ্ছে

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন